মোঃ নাসির উদ্দিনঃ গাজীপুরে বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় প্রেমিকাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ওয়ারড্রোবে লাশ রেখে রাস্তার পাশে ফেলে যাওয়ার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। এ ঘটনায় ওই নারীর প্রেমিক রাকিবুল হাসান সুমন সহ দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শেরপুরের নকলা থানাধীন মাওয়া এলাকার মর্তুজ আলীর সন্তান রাকিবুল হাসান সুমন (২৪), সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের চৌবাড়ী এলাকার শাহ আলম আকন্দের সন্তান মো. শাহরিয়ার আকন্দ (১৯), টাঙ্গাইল গোপালপুরের নবব গ্রামের দুলাল মিয়ার সন্তান মো. ফারুক হোসেন (২৪)। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানায়, দুই বছর আগে রাকিবুল হাসান সুমনের সাথে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক হয় ছামিনা খাতুন ওরফে সাবিনার। উভয়ে সাইনবোর্ড এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। একপর্যায়ে সাবিনাকে ছেড়ে স্ত্রী-সন্তানের কাছে চলে যান রাকিবুল হাসান সুমন। পরে সাবিনা প্রায় সময়ই সুমনকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করত এবং বিয়ের জন্য চাপ দিতেন। বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় সুমনকে গাজীপুর মহানগর বাসন থানাধীন নাওজোড় এলাকার স্থানীয় লোকজন দিয়ে মারধর করান সাবিনা। এ ঘটনায় গত ১৩ অক্টোবর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সাবিনাকে বাসন সড়কস্থ নাঈমের বাসায় নিয়ে এসে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করেন সুমন। ঐদিন সাবিনাকে বিয়ের জন্য চাপ না দেয়ার জন্য সুমন ও নাঈম বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। উল্টো সাবিনা হুমকি দিলে নাঈম তার হাত চেপে ধরে ও সুমন গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে সাবিনাকে হত্যা করে। পরে বাসন সড়কের একটি ফার্ণিচারের দোকান থেকে কিস্তিতে ওয়ারড্রোব কিনে এর ভেতরে সাবিনার লাশ রেখে ফারুক হোসেন ও শাহরিয়ার আকন্দের সহযোগিতায় পিকআপ যোগে জয়দেবপুর থানাধীন বি.কে বাড়ী এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে রেখে আসে। জানা গেছে, ১২ বৎসর পূর্বে মোজ্জামেল হক নামে এক ব্যক্তির সাথে সাবিনার বিয়ে হয়। সে সংসারে ১০ বয়সী একটি বাচ্চাও রয়েছে। দুই বৎসর পূর্বে তাদের মধ্যে ডিভোর্সের পর সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সাথে বাসন থানাধীন নাওজোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকছিলেন বলে জানতে পারেন সাবিনার ভাই জসিম উদ্দিন। ১৪ অক্টোবর দিবাগত রাতে জয়দেবপুর থানা পুলিশের সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বোনকে সনাক্ত করেন। এ ঘটনায় জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানার মামলা নং-১০ তারিখ-১৫/১০/২০২২খ্রিঃ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোডরুজু করেন। পরে গাজীপুর জেলা পিবিআই পরিদর্শক এ কে এম রেজাউল করিম মামলাটি তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতার করে। পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, ভিকটিম সাবিনা ও গ্রেফতারকৃত রাকিবুল হাসান সুমনের মধ্যে পরকিয় প্রেম চলছিল। বিয়ের জন্য চাপ এবং স্থানীয় লোকজন দিয়ে মারধর করার ঘটনায় সুমনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নাঈমের ভাড়া বাসায় ডেকে এনে ভিকটিমকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গ্রেফতারকৃতরা। পিবিআই’র প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ফারুক হোসেন, শাহরিয়ার আকন্দ ও রাকিবুল হাসান সুমন ভিকটিম ছামিনা খাতুন ওরফে সাবিনা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গত ১৮ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতে গ্রেফতারকৃতরা নিজেদের দায় স্বীকার করে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন
Leave a Reply