ফাহাদুল ইসলামঃ বাইরে সাইনবোর্ডে লেখা ‘মেঘনা ফ্রেশ গেস্ট হাউস’ । ভেতরে রমরমা দেহ ব্যবসা, মজার বিষয় হল বাহিরে ‘মেঘনা ফ্রেশ গেস্ট হাউস’ ,কাউন্টারে লেখা , হোটেলের নাম ‘মীম আবাসিক হোটেল’। হোটেলের নামটি আগে মীম ছিল। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ডিবি পুলিশ হোটেলটি বন্ধ করে দিয়েছিল অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে। এর কিছু দিন পর বাইরে হোটেলের সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে আবার চলছে একই কার্যকলাপ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মোল্লা প্লাজার ২য় তলায় চলে এ অসামাজিক কার্যকলাপ।
এ গেস্ট হাউসের নীচতলায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর দোতলায় আবাসিক হোটেলের আড়ালে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। এ নিয়ে ভীষণ বিরক্ত নীচতলার ব্যবসায়ীরা। হোটেলের এমন কার্যক্রম সম্পর্কে সবাই জানেন। তারপরও বন্ধ হয় না রহস্যজনক কারণে। অভিযোগ, সবাইকে ‘ম্যানেজ’ করেই চলে এ কারবার।বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হোটেলের বাহির থেকে দেখা গেল গ্রুপ করে যুবকেরা হোটেলে উঠা নামায় ব্যস্ত। এমতাবস্থায় হোটেলের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সাইনবোর্ডের লাইট বন্ধসহ নানারকম সতর্কতা অবলম্বন শুরু করে।তবে হোটেল থেকে আসা তিনজন খদ্দরের কাছ থেকে জানা যায়, দোতলায় কাউন্টারে ছিলেন দু’জন লোক। তারা ৫০০ টাকা নিয়ে সিরিয়াল নাম্বার দেয়। সে অনুযায়ী একেক রুমে প্রবেশ করে। বাইরে থেকে রিসিভ করে উপরে পাঠিয়ে দেয়।
এছাড়াও আরো জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পিরোজপুর বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় পিরোজপুর গ্রামের স্থানীয় প্রভাবশালী হাজী তাজু মোল্লার ছেলে সোয়েব মোল্লার মালিকানাধীন মোল্লা প্লাজায় কয়েক বছর আগে গড়ে উঠে মীম আবাসিক বোডিং নামের একটি আবাসিক হোটেল। সচেতন মহলের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য বতর্মানে নাম পরিবর্তন করে হোটেল মালিক মোঃ জয় মিয়া মেঘনা ফ্রেশ গেস্ট হাউজ নাম দিয়ে অবাধে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই প্রতিদিন এখানে চলছে অসামাজিক কার্যকালাপ, মাদক ও দেহ ব্যবসা। প্রতিদিন বাহির থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী এনে মেঘনা ফ্রেশ বোডিংটিতে চলে অবৈধ দেহ ব্যবসা। এছাড়া দেহ ব্যবসার অন্তরালে চলে রাতভর জুয়া ও মাদক সেবন।
তবে থানা পুলিশের নাকের ডগায় এই অসামাজি কার্যকলাপ চলছে প্রকাশ্যে, নেই কোন প্রতিকার। এ ব্যাপারে সোনারগাঁওয়ের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কোন ধরনের প্রদক্ষেপ নিচ্ছেনা বলেও অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
হোটেল ভবনের নীচতলার এক ব্যবসায়ী এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন। বললেন, ‘আমার এই সামনে দিয়েই হোটেলের সবাই চলাচল করে। খুব ঘৃণা লাগে। তিনি বলেন, ‘এসবের প্রতিবাদ করে লাভ নাই। প্রতিবাদ করলে আমরা ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমাদের উপর আক্রমণ হবে। হোটেলের মালিক ও জায়গার মালিক তারা খারাপ প্রকৃতির মানুষ। নিরাপত্তার ভয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতেও পারছিনা। হোটেলটিতে প্রশাসনের অনেকবার অভিযান চালালেও পরবর্তীতে সেই আগের মত কার্যক্রম চলে। বোঝাই যাচ্ছে বারবার অভিযান চললেও এই কার্যক্রম যখন চলে প্রশাসনকে হাত করে এ অসামাজিক কার্যক্রম চালায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হোটেলে সকালে আসলে বিকালে আবার যা ছিল তাই। এরা মাফিয়া না হলে এভাবে এসব চালাতে পারে?’
এবিষয়ে সোনারগাঁ থানার নব যোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ (ওসি )মাহাবুব আলম এর সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি হোটেলের ঠিকানা নোট করেন ও বিষয়টি দেখছেন বলে জানান।
Leave a Reply